কক্সবাজার: কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে বেড়াতে আসা তরুণীদের মারধর, কানে ধরে উঠবসসহ হেনস্তা করার অভিযোগে অভিযুক্ত সেই সমন্বয়ক কে গ্রেফতার করা হয়েছে। হেনস্তা তিনটি ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে ঘটনায় বিভিন্ন মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। এ ঘটনার জেরে শুক্রবার রাতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ভিডিও ফুটেজে দেখা যাওয়া যুবককে আটক করে।
পরে শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে হেনস্তার শিকার ভুক্তভোগী পিয়া মনী নামে একজন বাদী হয়ে ৬ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা দায়ের করে। মামলা দায়ের হওয়ার পর অভিযুক্ত আটক যুবককে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
গ্রেফতার ওই যুবক মোহাম্মদ ফারুকুল ইসলাম (২৩) শহরের ভোলা বাবুর পেট্রোল পাম্পসংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা। তিনি পরিবারের সাথে ওই এলাকায় থাকেন। তাদের আদিবাড়ি চট্টগ্রামের লোহাগড়া উপজেলার চুনতি এলাকায়।
ডিবির পরিদর্শক জাবেদ মাহমুদ জানান, সৈকতে মারধর ও নির্যাতনের কিছু ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার বিষয়টি পুলিশের নজরে আসে। পরে শুক্রবার রাতে শহরের ভোলা বাবুর পেট্রোল পাম্পসংলগ্ন এলাকায় সদর থানা ও ডিবি পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে।
কক্সবাজার জোনের ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল কালাম জানিয়েছেন, হেনস্তার ভিডিও ৩টি তিনি দেখেছেন। এরপর খোঁজ নিয়ে জেনেছেন ছাত্র সমন্বয়ক পরিচয়ে কিছু শিক্ষার্থী সৈকতে ভ্রমণে আসেন গত ১১ সেপ্টেম্বর দুপুরে। এসময় তৃতীয় লিঙ্গের কয়েকজনকে মারধর করে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। এটি আইনগত অপরাধ। ঘটনার সময় উপস্থিত পুলিশের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
কক্সবাজার জেলা পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ‘ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে আরোহী এবং প্রিয়ামনী নামে দুইজনকে হেনস্ত করতে দেখা যায়। এ ঘটনায় শুক্রবার রাতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ঘটনার সঙ্গে জড়িত যুবককে আটক করে। পরে শনিবার বিকালে তৃতীয় লিঙ্গের হেনস্তা শিকার পিয়া মনি বাদি হয়ে ৬ জনের বিরুদ্ধে কক্সবাজার সদর থানায় মামলা করেন। আটক যুবকসহ অজ্ঞাত আরও ৫ জনকে আসামি করে দায়ের করা এজাহারটি মামলা হিসেবে নথিভূক্ত করা হয়েছে। ইতিমধ্যে আটক যুবককে জিজ্ঞাসাবাদের পর আদালতে পাঠানো করা হয়েছে। মামলার অপর আসামিদের শনাক্ত করে গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান চলছে।’
এদিকে পুলিশের অভিযানে আটক মোহাম্মদ ফারুকুল ইসলাম নিজেকে সমন্বয়ক দাবি করলেও তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেউ নন বলে জানিয়েছেন কক্সবাজারের স্থানীয় সমন্বয়কেরা।
স্থানীয় সমন্বয়ক শাহেদুল ইসলাম শাহেদ বলেন, ‘আটক যুবক জেলার সমন্বয়ক বা নেতৃত্ব পর্যায়ের কেউ নন। তবে আন্দোলনে যেহেতু শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি নানা শ্রেণি-পেশা, মত ও পথের মানুষের অংশগ্রহণ ছিল; আটক যুবকেরও অংশ থাকতে পারে। তাই বলে তিনি সমন্বয়ক পরিচয় দেওয়ার এখতিয়ার রাখেন না। যে অপরাধ করবে তার শাস্তি হতে হবে।’