Close

কাজে বিশ্বাসী জিনাত সোহানা, সংসদে বলতে চান সবার কথা

চট্টগ্রামঃ নৌকা প্রতীক নিয়ে দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিতে চট্টগ্রাম-৮ আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন চট্টগ্রামের নারীনেত্রী এডভোকেট জিনাত সোহানা চৌধুরী।

সাহসিকা এই নারীর প্রচেষ্টায় মাদরাসাগুলোতে প্রথমবারের মতো গাওয়া হয় জাতীয় সংগীত ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি।’

দেশের অন্যতম শীর্ষ কওমি মাদরাসা চট্টগ্রামের জামেয়া দারুল মাআরিফ আল ইসলামিয়া ও ফটিকছড়ির আল জামেয়া ইসলামিয়া ওবাইদিয়া (নানুপুর) মাদরাসা। অন্যদিকে দেশের অন্যতম শীর্ষ আলিয়া মাদরাসা চট্টগ্রাম পাঁচলাইশের জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া মাদরাসা। এভাবে নাম ধরে ধরে বলা যাবে চট্টগ্রাম অঞ্চলের শতাধিক কওমি ও আলিয়া মাদরাসার নাম। যেখানে একযুগ ধরে  অবিরাম ছুটে চলেছেন এক সাহসী নারী।

এডভোকেট জিনাত সোহানা চৌধুরী সুচিন্তা ফাউন্ডেশন চট্টগ্রাম বিভাগের সমন্বয়ক, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) সদস্য, চট্টগ্রাম চেম্বার অফ কমার্স ও উইমেন্স চেম্বার এন্ড কমার্সের সদস্যের পাশাপাশি ফারমিন গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান হিসেবে পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সদস্য হিসেবে কাজ করছেন।

‘জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস বিরোধী আলেম ওলামা শিক্ষার্থী সমাবেশ’ কর্মসূচির আওতায় চট্টগ্রামের মাদরাসাগুলোতে জঙ্গিবাদ বিরোধী প্রচার-প্রচারণার মাধ্যমে বিপুল সংখ্যক ছাত্র-ছাত্রীদেরকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ করেছেন। তাদের শিক্ষার মূলধারায় সম্পৃক্ত করার কাজ করছেন। তার উদ্যোগে শিক্ষার্থীরা উদ্ধুব্ধ হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায়। শপথ নিচ্ছে নিজেদের জঙ্গিবাদে না জড়ানোর।

রাজনৈতিক পরিবারে বেড়ে ওঠা, তাই ছোটবেলা থেকেই বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে উঠাবসা অ্যাডভোকেট জিনাতের। সব সময়ই তার চেষ্টা থাকে ব্যতিক্রম কিছু করার। মানুষের বিপদ-আপদেও পাশে দাঁড়ান। করোনাকালীন সময়ে ফ্রন্ট লাইনার যোদ্ধা হিসেবে করোনা আইসোলেশন সেন্টার গড়ে বিনামূল্যে সেবা ও তাহের নাহার ফাউন্ডেশনের হয়ে ৩৫০টিরও অধিক সেমি পাকা গৃহনির্মাণ করে দিয়েছে সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে।

চট্টগ্রামের মাদরাসাসমূহে জাতীয় সংগীত গাওয়া এবং জঙ্গিবিরোধী প্রচারণার মাধ্যমে আলোচনায় তিনি। এবার চট্টগ্রাম ৮ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করে জমাও দিয়েছেন। ব্যতিক্রমী সব কর্মসূচি, দলের প্রতি আনুগত্য ও ত্যাগের কারণে চট্টগ্রামবাসী তাকে চান সাংসদ হিসেবে।
জানা গেছে, চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন মাদরাসায় অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে জঙ্গিবাদ ও সাম্প্রদায়িক অপশক্তির বিরুদ্ধে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। ধারাবাহিক কর্মসূচির কারণে সাধারণ মানুষের কাছে ‘অদম্য ও সাহসী সোহানা’ নামে পরিচিতি পান তিনি। কারো বাধা তাকে দমাতে পারেনি। অনেকেই ভেবেছিলেন প্রতিরোধের মুখে পিছিয়ে যাবেন সোহানা। কিন্তু না, সোহানা আরও উজ্জ্বল হন তার কাজের মাধ্যমে।

ব্যতিক্রমী কর্মসূচি শুরুর সময় তার অনেক সহযোদ্ধা পেছন থেকে সটকে পড়েছেন, কিন্তু তিনি ছিলেন সিদ্ধান্তে অটল। এগিয়ে যেতে থাকেন দৃঢ়পদে, অভিষ্ঠ লক্ষ্যে। যার স্বীকৃতি হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের হাত থেকে সম্মাননা স্মারক গ্রহণ করেন সোহানা।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও নৌকার পক্ষে ছিলো তার নানা রকম উদ্যোগ। চট্টগ্রাম বিভাগজুড়ে নৌকার প্রার্থীদের সমর্থনে ডিজিটাল পদ্ধতিতে ভিজুয়্যালি বিএনপি-জামায়াতের ১০০ দিনের হরতালের বর্বরতার চিত্র এবং বিভিন্ন এলাকায় সংখ্যালঘু নির্যাতনের চিত্র এবং দিন বদলের উন্নয়নের চিত্র, প্রতিটি মানুষের কাছে তুলে ধরেন। নৌকার পক্ষে জনমত সৃষ্টিতে ব্যাপক ভূমিকা রাখে তার এসব উদ্যোগ। ফলে আওয়ামী লীগের গ্রামগঞ্জ, শহর ও তৃণমূলের নেতাকর্মীদের কাছে অত্যন্ত প্রিয় মুখ হয়ে ওঠেন অ্যাডভোকেট জিনাত সোহানা চৌধুরী।

জিনাত সোহানা বলেন, ‘জঙ্গিবাদ বিরোধী আলেম ওলামা শিক্ষার্থী সমাবেশের মাধ্যমে চট্টগ্রাম জেলার বিভিন্ন মাদরাসায় (কওমি, সুন্নি) জঙ্গিবাদ বিরোধী সমাবেশের মাধ্যমে বিপুল সংখ্যক ছাত্র-ছাত্রীদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূলধারায় সম্পৃক্ত করার জন্য দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে আসছি। মাদরাসায় গিয়ে গিয়ে জয় বাংলা স্লোগান দেওয়া ও জাতীয় সংগীত পাঠ করানো এবং বর্তমান সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরছি। এ কর্মসূচি এখন চলমান’।
তিনি আরও বলেন, ‘জননেত্রী দেশরত্ন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্ন স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার কাজে নিজেকে সম্পৃক্ত রেখেছি। সামাজিক দায়বদ্ধতার নিমিত্তে নারীর উন্নয়ন ও নারীর ক্ষমতায়নে সমাজের বিভিন্ন স্তরে সরকারি-বেসরকারিভাবে নিজেকে জড়িত করেছি। এর ফলে চট্টগ্রাম জেলার পিছিয়ে পড়া নারীরা সমাজের উন্নয়ন ও গঠনমূলক কাজে নিজেদের সম্পৃক্ত করছে। এসব কাজে নারীদের আরও বেশি সম্পৃক্ত করতে বিভিন্ন সভা, সেমিনার ও সামাজিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছি। নারীদের উৎসাহ দিচ্ছি। নারীদের নিপীড়ন বন্ধে কাজ করে যাচ্ছি।’

এ ছাড়া সরকার বিরোধী নানা প্রপাগান্ডা ও অপপ্রচারের বিরুদ্ধে রাজপথে সরব উপস্থিতি রয়েছে অ্যাডভোকেট জিনাত সোহানা চৌধুরীর। সরকারের পক্ষে অনলাইন ও সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক প্রচার ও জনমত গড়ে তোলা এবং সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের চিত্র জনগণের তুলে ধরতে তার চেষ্টা প্রশংসনীয়।

চট্টগ্রাম জেলা আদালতে অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন রাউজানের নোয়াজিশপুরে জন্ম নেওয়া জিনাত সোহানা চৌধুরী। (এলাকায় শিবলী নামেও যাকে বেশী জানে চিনে)। চট্টগ্রাম কারাগারের বেসরকারী কারা পরিদর্শকের দায়িত্ব পালন করেছেন দীর্ঘদিন।

নারীর ক্ষমতায়নে কাজ করার শপথ নিয়ে এগিয়ে চলা জিনাত সোহানা এবার দলীয় মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন। তিনি সংসদে বলতে চান সবার কথা, বিশেষ করে নারীদের কথা, পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর কথা।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি কাজে বিশ্বাসী দিনবদলের নেত্রীর কাফেলায় নৌকার মাঝি হয়ে এলাকার ভাগ্য উন্নয়নে কাজ করতে চাই। আমি স্কুলজীবন থেকে ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। আওয়ামী লীগ ছাড়াও সহযোগী ও সামাজিক সংগঠনের দায়িত্ব পালন করছি। চট্টগ্রাম উত্তরজেলা আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক হিসেবেও কাজ করেছি গত কমিটিতে। এমপি মনোনীত হলে তরুণদের কর্মসংস্থান ও স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করবো। চট্টগ্রামকে আধুনিক নগরে রূপান্তরিত করবো’।

কাজে বিশ্বাসী এ নারী বলেন, ‘জননেত্রী শেখ হাসিনা সারাবাংলার খবর রাখেন। আমি নেত্রীর ওপর আস্থাশীল। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

0 Comments
scroll to top